রবিবার, ০৭ মার্চ ২০২১, ০৫:০০ অপরাহ্ন
উন্নত দেশ গুলো মানুষ মারতে তৈরি করছে অত্যাধুনিক সামরিক অস্ত্র। এখনো থেমে নেই। তারা তো মানুষকে বাঁচতে গবেষণায় একটি পারমাণবিক মিসাইল তৈরি টাকাও খরচ করেনি। পৃথিবী উল্টো নিয়মে চলছে। মানুষকে মারতে ও ভয় দেখিয়ে দমিয়ে রাখতে যত আয়োজন বিশ্বে। বাঁচাতে ও সাহস যোগাতে তেমন কোন আয়োজন আছে কী? আমার জানা নেই।
আমাদের পেশার কথায় ধরুন। রাষ্ট্রের কত উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিতরা চাকরির সুবাদে রাষ্ট্রের সকল সুযোগ সুবিধা নিয়ে দূর্নীতি করছে। আমরা সাংবাদিকরা বিশেষ করে জনকন্ঠ পত্রিকা ও যারা কাজ করে তারা দেশের জন্য প্রাণ বাজি রেখে কাজ করছি। মুক্তিযুদ্ধের, গণহত্যা, ধর্মান্ধতা, উগ্রমৌলবাদী,মঙ্গা দূর্নীতি সহ কোন বিষয় নিয়ে কাজ করিনি। বিএনপি জামাত ও শিবির কর্মীরা কিনা নির্যাতন করেছে। আমাদের দমাতে পারেনি। আমরা শামছুর রহমান ভাইয়ের মত কত সহকর্মী কে হারিয়েছি। কতজন পঙ্গুত্ব বরণ করেছে। আমি তো মরতে মরতে বেঁচে আছি। কতজন মামলা হামলায় কষ্ট পেয়েছে। এদেশে মুক্তিযুদ্ধের সরকার আনতে কষ্ট করেছি।জনমত তৈরিতে কাজ করেছি। আমাদের সম্পাদক স্যারসহ তার সাথে আমাদের কর্মকর্তা গণ জেল খেটেছে, নির্যাতন সইতে হয়েছে। কিন্তু বিনিময়ে কী পেল কী পেলাম। জীবনের হিসাবের খাতা শূন্য।
অনেকে সাংবাদিক তো জীবন শুরু করে ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে। অবসর জীবনে এখন এই পেশা টাকে উপভোগ করছেন। কিন্তু আমি তো এটা দিয়ে জীবন শুরু করেছি। এখন মাঝ পথে এসে তরী কোন পথে ভীরবে মহান স্রষ্টা জানেন। জনকন্ঠ আমার যৌবনের প্রেম জনকন্ঠ আমার শেষ ভালোবাসা ও শেষ ভরসা। যৌবনে সাংবাদিকতাটা মাথায় এমন ভাবে চেপে বসেছিল অন্য কিছু ভালো লাগতো না। জীবন চালাতে নূন্যতম অর্থের প্রয়োজন। তখন কিন্তু মনে হয়নি।কত দিন মিশন মোড়ের এক সময়ের খবার হোটেল ব্যবসায়ী আমার প্রিয় বন্ধু র্মীজা নয়ন বেগের কাছে ফ্লিম কেনার টাকা, হাওলাতি মোটর সাইকেল এর তেল কেনার টাকা নিয়েছি। কোখন পরিশোধ করেছি। আবার ও যদি সঙ্গে থাকত। তখন ও টাকা ফিরত দিলেও নিতো না। যাক —- সেসব কথা নয়ন এখন জীবন জীবিকার জন্য অনেক দূরে। সেই চট্টগ্রামে। ওকে অনেক মিস করি। আমেরিকার আমার জ্যাঠাত ভাই বোনরা সুপ্রতিষ্টিত। বড় আব্বা একজন অবসর প্রাপ্ত সচিব ছিলেন। অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সিইও পদে কাজ করছেন।
তিনি কত বার বলেছিলেন বিকম (অর্নাস),এমকম (ব্যবস্থাপনা) ও এলএলবি করা ছেলে এসব কী করছে। আবার আমার ভক্ত ছিল। তখন জনকণ্ঠ পত্রিকা প্রচার সংখ্যায় এক নম্বরে ছিল। বড় আব্বা একজন মুক্তিযোদ্ধা আমার বাবাসহ ওনারা তিন ভাই এক সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ করেছে। জনকণ্ঠে আমার রিপোর্টে প্রকাশ হলে মনোযোগ দিয়ে পড়তেন। উৎসাহ দিতে বাসায় ফোন দিতেন। আমেরিকার এক ছোট ভাই ৭দিন আগে ফোন করে বলে তুই এখানে চলে আয় সব ব্যবস্তা আমি করব। এই বয়সে যাবনা। মা শুনে বলে। কোথাও যাওয়ার দরকার নেই। আমাদের যে জমি জমা আছে। এই যতেষ্ট। তোদের দুই
ভাইয়ের চলে যাবে। ভাই একটি সরকারি কলেজে অধ্যাপনা করে্। মা, বাবা, ভাই পরিবার নিয়ে এক সাথে আছি।
সাংবাদিকতা করে ২০০৭ সালে তিস্তা পাড়ের জীবন বৃত্তান্ত নামে জনকন্ঠ পত্রিকায় সিরিজ রিপোর্ট লিখে উত্তরাঞ্চল উন্নয়ন সাংবাদিকতা পুরস্কার পেয়েছি।
এছাড়া আমি কিছু না পেলেও জনকন্ঠ পত্রিকা দেশের মানুষ, রাষ্টব্যবস্থায় অনেক কিছু দিয়েছে। জনমত তেরি করে ধবংস করতে পেরেছে মৌলবাদী চক্রসহ নানা অপশক্তি কে। এখন আপোষহীন ভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে রক্ষকের দায়িত্ব পালন করছে।
সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম শাহীন
দৈনিক জনকণ্ঠ, লালমনিরহাট
Leave a Reply