1. mrveadmin@dailylalbarta.com : dailylalbarta :
রেকর্ড বাজেট ঘাটতি, অর্ধেকই বিদেশি ঋণনির্ভর - dailylalbarta
১৩ই মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ| ২৮শে ফাল্গুন, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ| বসন্তকাল| সোমবার| বিকাল ৫:৩২|

রেকর্ড বাজেট ঘাটতি, অর্ধেকই বিদেশি ঋণনির্ভর

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, জুন ১০, ২০২২,
  • 37 Time View

বার্তা ডেস্কঃ

বিপুল বিদেশি ঋণের বোঝা নিয়ে এখন প্রায় সর্বস্বান্ত শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণের মাঝেই বাংলাদেশে নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এই বাজেট বাস্তবায়নে বিশাল অঙ্কের বিদেশি ঋণ নেয়ার পরিকল্পনাও সাজিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।

আড়াই লাখ কোটি টাকার রেকর্ড ঘাটতির বাজেটে প্রায় সোয়া লাখ কোটি টাকাই বিদেশ থেকে ঋণ নিতে চান আ হ ম মুস্তফা কামাল।

অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার যে বাজেট প্রস্তাব করেছেন তাতে ঘাটতির পরিমাণ ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। এই ঘাটতি পূরণের তিনি অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা এবং বিদেশি উৎস থেকে ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা ঋণ করার পরিকল্পনা করছেন।

মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) তুলনায় ঘাটতির এই পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে ৫.৪ শতাংশ।

মহামারির আগে প্রায় এক যুগ সরকার ঘাটতির পরিমাণ জিডিপির ৫ শতাংশের মধ্যে রেখে বাজেট প্রণয়নের চেষ্টা করেছে। তবে মহামারি শুরুর পর থেকে বাড়তি টাকা যোগানোর চাপে গত দুই বছরের বাজেটে তা ৬ শতাংশ এবং ৬ দশমিক ২ শতাংশে পৌঁছায়।

এবার তা কিছুটা কমে এলেও আগের মতো ৫ শতাংশের মধ্যে আসেনি।

আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হলে সেই ঘাটতি পূরণ করতে হয় ঋণ করে। সরকার বিদেশি সাহায্য ও বিদেশি ঋণ নিয়ে, দেশের সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলো থেকে ধর করে, জনগণের কাছে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে সেই ঘাটতি পূরণ করতে পারে।

এবারের বাজেটের পৌনে ৭ লাখ কোটি টাকা খরচ করতে হলে অর্থমন্ত্রীকে ওই অর্থের ৩৮ শতাংশই জোগাড় করতে হবে ঋণ করে।

সেজন্য বিদেশ থেকে ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৮ এবং অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৪৬ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকার মতো ঋণ করার পরিকল্পনা জানিয়েছেন কামাল।

বিগত বছরগুলোতে বড় বড় অবকাঠামো প্রকল্প করার তাগিদে বিদেশ থেকে ঋণ নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। তবে বিদেশি ঋণের সুদ দিতে সরকারের রিজার্ভ থেকে ডলার খরচ করতে হয়। আর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিশ্ববাজারে ডলারের দর চড়ে যাওয়ায় এমনিতেই রিজার্ভ কিছুটা চাপে আছে।

অভ্যন্তরীণ খাতের মধ্যে ব্যাংকিং খাত থেকে রেকর্ড ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্য ধরা হয়েছে বাজেটে, যা মোট ব্যয়ের ১৫ দশমিক ৭ শতাংশ।

এছাড়া সঞ্চয়পত্র থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য খাত থেকে আরও ৫ হাজার কোটি টাকা নেয়ার পরিকল্পনা করেছেন কামাল। বাজেটে সম্ভাব্য বৈদেশিক অনুদান পাওয়ার পরিমাণ ধরা হয়েছে সোয়া ৩ হাজার কোটি টাকা।

ঋণের পরিমাণ বেড়ে গেলে অর্থনীতিতে বাইরে থেকে আসা তারল্য যোগ হয়। তাতে মূল্যস্ফীতির ঝুঁকি বাড়ে। তাছাড়া সেই ঋণের জন্য সরকারকে সুদও গুণতে হয়।

এবার দেশি-বিদেশি ঋণের জন্য ৮০ হাজার ৩৭৫ কোটি টাকা খরচ হবে বলে অর্থমন্ত্রী হিসাব ধরেছেন, যা মোট অনুন্নয়ন ব্যয়ের প্রায় ২০ শতাংশ।

আবার মন্দার দিনে ওই বাড়তি টাকার যোগান সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে গতি আনতে পারে, তাতে স্থবির অর্থনীতিতে গতি আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়, মুস্তফা কামাল সেই আশাই করছেন। তার এবারের বাজেটের শিরোনাম ‘কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন।’

আবার ব্যাংক থেকে সরকার বেশি ঋণ নিলে ব্যাংকের তারল্যে চাপ বাড়ে। তাতে উদ্যোক্তাদের ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকের সক্ষমতায় ঘাটতি দেখা দেওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। বিনিয়োগ কমে যায়, প্রবৃদ্ধির গতি শ্লথ হয়ে যায়।

গেল ২০২১-২২ অর্থবছরের মূল বাজেটে বিদেশি ঋণের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ১ লাখ ১২ হাজার ১৮৮ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ৯১ হাজার ৮১২ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়েছে।

তার আগে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৫৭ হাজার ৭২৬ কোটি টাকার বিদেশি ঋণ পেয়েছিল বাংলাদেশ।।

তবে দেশে বিদেশি ঋণসহায়তার গতি বেশ ভালো। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সবশেষ তথ্যে দেখা যায়, বিদায়ী অর্থবছরের ১০ মাসেই (জুলাই-এপ্রিল) বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থার কাছ থেকে ৭৭০ কোটি ৮৫ লাখ (৭.৭১ বিলিয়ন) ডলারের ঋণসহায়তা পেয়েছে বাংলাদেশ।

বর্তমান বিনিময় হার হিসাবে (প্রতি ডলার ৯১ টাকা ৫০ পয়সা) টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ প্রায় ৭১ হাজার কোটি টাকা।

দেশের ইতিহাসে এর আগে কোনো অর্থবছরের পুরো সময়েও (১২ মাস) এত বেশি বিদেশি ঋণসহায়তা আসেনি।

অর্থনীতির গবেষক আহসান এইচ মনসুর বলছেন, ‘দুই বছরের বেশি সময় ধরে চলা মহামারির ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ বিভিন্ন দাতা দেশ ও সংস্থার কাছ থেকে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি সহায়তা পাওয়ায় এই উল্লম্ফন হয়েছে।’

বিদায়ী অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। সংশোধনে তা ৫ লাখ ৯৩ হাজার ৫০০ কোটি কোটিতে নামিয়ে আনতে হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020 banglahost
Design & Developed by : BD IT HOST