1. mrveadmin@dailylalbarta.com : dailylalbarta :
মোর প্রতিবন্ধি ছেলে টাক জেল থেকে আনি  দেন সুদারুর টাকা বাড়িভিটা বিক্রি করে দেইম-, মায়ের আকুতি  - dailylalbarta
২রা মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ| ১৭ই ফাল্গুন, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ| বসন্তকাল| বৃহস্পতিবার| রাত ৩:৪১|

মোর প্রতিবন্ধি ছেলে টাক জেল থেকে আনি  দেন সুদারুর টাকা বাড়িভিটা বিক্রি করে দেইম-, মায়ের আকুতি 

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, জুন ৯, ২০২২,
  • 49 Time View
লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
মোর প্রতিবন্ধি ছেলে টাক জেল থেকে আনি  দেন সুদারুর টাকা বাড়িভিটা বিক্রি করে দেইম-, মা সুফিয়া বেগম  আকুতি  জানায় প্রতিনিধির কাছে। এলাকায় গিয়ে জানাযায়,ভুক্তভোগী সফিয়ার রহমান উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের বাড়াই পড়া গ্রামের মৃত জাফর আলীর ছেলে।  সে একজন শারিরীক প্রতিবন্ধী।  হাতীবান্ধায় উপজেলার  দাদন ব্যবসায়ী আবু তালেব, তার ভাই তোতা মিয়া ও মানিক মিয়া কাছ থেকে চড়া সুদের ওপর টাকা নিয়ে সর্বশান্ত হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষ। প্রতিবাদ করলেই মিথ্যা মামলা দিয়ে করা হচ্ছে হয়রানি। তাদের খপ্পরে পড়ে প্রায় ৬ মাস ধরে জেল হাজতে আছেন প্রতিবন্ধী সফিয়ার রহমান। কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন স্ত্রী-সন্তান আর বৃদ্ধ মা সুফিয়া বেগম।অভিযুক্ত দাদন ব্যবসায়ী আবু তালেব, তার ভাই তোতা মিয়া ও মানিক মিয়া হাতীবান্ধা উপজেলার বাড়াইপাড়া গ্রামের মৃত ছকমল হোসেনের ছেলে।জানাগেছে, অসহায় প্রতিবন্ধী সফিয়ার রহমান মেয়ের বিয়ের জন্য দাদন ব্যবসায়ী তোতা মিয়াকে ফাঁকা চেক ও স্টাম্প দিয়ে ৫০ হাজার টাকা সুদের ওপর টাকা নেন। আর এর জন্য প্রতিমাসে সুদ হিসেবে ১০ হাজার টাকা তোতাকে দেন তিনি। অনেক কষ্ট করে ৬ মাস ঠিকমতো সেই সুদের টাকা দেয় সফিয়ার। কিন্ত এরপর সুদের টাকা দিতে ব্যর্থ হয় সে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তোতা মিয়া নিজের ভাই মানিককে দিয়ে আদালতে ৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা আত্মসাতের মামলা করে প্রতিবন্ধী সফিয়ারের বিরুদ্ধে। সেই মামলায় আটক হয়ে বর্তমান লালমনিরহাট কারাগারে আছেন প্রতিবন্ধী সফিয়ার।

সরেজমিনে সফিয়ারের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিবন্ধী সফিয়ারের স্ত্রী সন্তান বাড়িতে নেই। তারা জীবিকা নির্বাহের তাগিদে বুড়িমারী স্থলবন্দরে পাথর ভাঙার কাজ করতে গেছেন বলে জানান বাড়িতে থাকা সফিয়ারের বৃদ্ধ মা সুফিয়া বেগম। সুফিয়া বেগমের কাছে তার ছেলে সফিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি হাউমাউ করে কান্না শুরু করেন। পরে চোখের পানি মুছতে মুছতে বলেন, বাবা আমি কিছু বলতে পারবো না। আমি যদি ও্ই সুদ ব্যবসায়ী পরিবারের বিরুদ্ধে কিছু বলি তাহলে তারা আমার ছেলেকে নাকি জেলে দেবে।

তিনি আরও বলেন, পুলিশও তাদের কথায় ওঠে বসে। তাই আমি কাউকে কিছু বলতে চাইনা। দরকার হলে আমাদের একমাত্র এই বসত ভিটা বিক্রি করে টাকা দেবো। পারলে আপনারা আমার ছেলেকে জেল থেকে বের করে আনেন। কয়েকদিন আগে আমি তাকে দেখতে গিয়েছিলাম, এ সময় আমার ছেলে সফিয়ার কান্না করতে করতে বলেন মা এটি থাকলে মুই মরি যাইম, যেমন করি হোক মোক এটি থাকি বের করি নিয়া যাও বলে আমার মাটিতে লুটিয়ে পড়ে কাঁদতে থাকেন সুফিয়া বেগম  সফিয়ারের ভাই অলিয়ার বলেন, আমার ভাই তোতার কাছে ৫০ হাজার টাকা নিয়া ভাতিজির বিয়ে দেয়। সেই টাকার সুদ ও আসল টাকা প্রায় সব দেয়া হয়েছে, অল্প কিছু টাকা বাকি আছে। সেটাও আমরা দিতে চাইছি। কিন্ত টাকাটা দিতে দেরি করায় তোতা তার ভাই মানিককে দিয়ে আদালতে মামলা করায়। আর সেই মামলায় আমার ভাই জেলে। তাদের পুরো পরিবার সুদ ব্যবসার সাথে জড়িত। তাদের কারণে এলাকার অনেক মানুষ বাড়ি ছাড়া।
স্থানীয় বাসিন্দা আবু বক্কর বলেন, আমরা তোতাকে অনেক অনুরোধ করছি সফিয়ারের নামে যেন মামলা না করে। যে কয়টা টাকা পাবে তার জন্য কিছুদিন সময় চাওয়া হয়েছিলো। কিন্ত তারা সে কথা এড়িয়ে যায়। অতঃপর তারা মামলা করে। আর সেই মামলায় সফিয়ার জেলে। মুদি দোকানদার আনিছুর বলেন, তালেব, তোতা, মানিক চিহ্নিত সুদ ব্যবসায়ী। আমি তাদের কাছে সুদের ওপর টাকা নিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছি। সুদের টাকা দিতে একটু দেরি হলে তারা আমার দোকানে এসে বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী জোড় করে নিয়ে যান। আমি চাই তাদের বিচার হোক। তাদের কারণে ফল ব্যবসায়ী হাসিনুর, ডিলার ব্যবসায়ী হাসু, কোম্পানিতে চাকুরি করা মোনাম এখনো বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে আছেন। আর এই সুদ ব্যবসায়ীদের সব ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করেন মোতাহার নামের এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ী।রিক্সা চালক আমিনুর বলেন, সুদের টাকা দিতে না পারায় তালেব আমার আয়ের একমাত্র উৎস রিকশা নিয়ে যায়। পরে অনেক কষ্ট করে টাকা দিয়ে রিক্সা ফেরত আনি।এ বিষয়ে দাদন ব্যবসায়ী তোতা মিয়া বলেন, আমি সফিয়ারকে আমার ছোট ভাই মানিকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে দিছি। দাদন ব্যবসায়ী মানিক মিয়া বলেন, সবাই সুদের ব্যবসা করে। তাহলে আমরা করলে দোষের কি। টাকা দিতে পারে নাই তাই মামলা করেছি অপর ব্যবসায়ী আবু তালেব বলেন, আমি সুদের ব্যবসা করিনা। মানুষ এমনি এমনি আমার নামে মিথ্যা কথা ছড়াচ্ছে।

হাতীবান্ধা উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মাহবুবুল আলম বলেন, সফিয়ার একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। আমি তার মায়ের সাথে কথা বলেছি। সফিয়ারকে ছাড়িয়ে আনার জন্য যা যা করনীয় আমরা করবো।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020 banglahost
Design & Developed by : BD IT HOST