বার্তা ডেস্কঃ
ধর্ম মন্ত্রণালয় কর্তৃক ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের প্রথম পর্যায়ে নির্মিত ৫০ টি মডেল মসজিদের উদ্বোধন করা হয় গত বছরের ১০ জুন। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে একযোগে এ সকল মডেল মসজিদের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উদ্বোধনের ১ বছর সাড়ে ৪ মাসেও লালমনিরহাটের পাটগ্রামে নির্মিত মডেল মসজিদটি চালু হয়নি নামাজ আদায়। দীর্ঘদিন হতে এ মডেল মসজিদ বন্ধ থাকায় সাধারণ মুসল্লিদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার তৈরি হয়েছে। বর্তমানে তড়িঘড়ি করে মসজিদের নির্মান কাজ অসমাপ্ত অবস্থায় মসজিদটি চালু করতে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় ইসলামী ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬০ টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের আওতায় লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার পাটগ্রাম পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের মির্জারকোট এলাকায় এ মসজিদটি নির্মাণ করা হয়। প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ কাজ করেন ঢাকার ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিনিয়ার বিল্ডার্স। নির্মিত এ মসজিদটিসহ গত বছরের ১০ জুন দেশের ৫০ টি মসজিদ একযোগে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
৪৩ শতাংশ জমির মধ্যে ৩/তিন তলা বিশিষ্ট এ মসজিদটিতে একসঙ্গে ৮ শত মানুষ নামাজ আদায় করার ব্যবস্থা রয়েছে। নারী- পুরুষ পৃথক অজু ও নামাজের স্থান, হজ্জ যাত্রীদের নিবন্ধন, গবেষণাগার, পাঠাগার, হিফজ মাদ্রাসা, মক্তব, পর্যটকদের আবাসন ব্যবস্থা, ইমামদের প্রশিক্ষণ ও গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থা, দাওয়াতি কার্যক্রম, মৃত ব্যক্তির গোসলের ব্যবস্থা, মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিনের আবাসন প্রকল্পসহ বহুমুখী ইসলামিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিশেষভাবে এ মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গণপূর্ত বিভাগের মাধ্যমে নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার।
স্থানীয়রা জানান, উদ্বোধনের পর হতে এ পর্যন্ত কোনোদিনই এ মসজিদটিতে নামাজের জন্য আযান বা কোনো ওয়াক্ত নামাজ পড়া হয়নি ।
মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র পরিচালনা নীতিমালা-২০২১ অনুযায়ী গত বছরের ডিসেম্বর মাসে পাটগ্রাম মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের জন্য উপজেলার জগতবেড় ইউনিয়নের আনিছুর রহমানকে পেশ ইমাম, আবু বক্কর সিদ্দিককে মুয়াজ্জিন ও জয়নুল আবেদীন এবং আবু নাইমকে খাদেম পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।
মির্জারকোর্ট এলাকার একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা হলে বলেন, ‘বিশাল এ সুন্দর মসজিদটি নির্মিত হলেও এখন পর্যন্ত চালু করা হয়নি। কেনো চালু হয়নি তা জানিনা।’
মডেল মসজিদ নির্মাণ ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সহ প্রকৌশলী আনিছুর রহমান বলেন, ‘মসজিদ চালু না হওয়ার মুল কারণ রাস্তা ও এসি (এয়ার কন্ডিশন) না থাকা। এজন্য কর্তৃপক্ষ মসজিদটি বুঝে নেয়নি। মসজিদ নির্মাণে জটিল সমীকরণ আছে, এটা আমি জানি কম।’
গণপূর্ত বিভাগ লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ‘রাস্তা না থাকায় মসজিদটি চালু করা সম্ভব হয়নি। আমরা রাস্তা নির্মাণ করতেছি, এ সপ্তাহে না হলে পরের সপ্তাহে ইনশাল্লাহ্ মসজিদে নামাজ পড়া শুরু হবে।’
উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবং পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল হক সুমন বলেন, ‘মসজিদটি নির্মাণে এখনও কিছু ত্রুটি রয়ে গেছে। চালু করলে তো নির্মাণ ত্রুটি গুলো সারবে না। আমাদের কথা হচ্ছে নির্মাণ প্রতিষ্ঠানকে কিছু দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো সম্পন্ন করা হলে মসজিদটি বুঝে নেওয়া হবে। খুব শীঘ্রই মসজিদটি চালু করা হবে।’