শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২১, ০৩:২৭ পূর্বাহ্ন
সানি,লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার সীমান্তবর্তী কুচলিবাড়ী ইউনিয়নের দিঘলটারী নামক এলাকায় এক দিনমুজুরের কন্যা ৮ বছরের শিশু খেলতে খেলতে মনের অজান্তে নিজ বাড়ীতে সন্ধ্যার সময় পরনের কাপড়ে আগুন লেগে প্রায় ৪০% শরীর অগ্নিদগ্ধ হয়েছে।
গত দু’দিন ধরে আয়শা আক্তার ফারজানা নামের ওই শিশুটি পাটগ্রাম হাসপাতালে ভর্তি আছে।টাকা পয়সার অভাবে পরিবারের পক্ষ থেকে চিকিৎসার ব্যয়ভার সামলাতে পারছেন না দিনমুজুর পরিবারটি।
কলিজার টুকরো অগ্নিদগ্ধ মেয়েকে মরনাপন্ন অবস্থায় বাড়িতে ফেলে রেখে অসহায় বাবা আব্দুস সালাম ফেনীতে গেছেন কাজ করতে।
গতকাল শুক্রবার রাত ১২ টার আগে ও পরে শিশুটির খবর নিতে গিয়ে পাটগ্রাম হাসপাতালে জানা যায় করুন এক অজানা কাহিনী।
শিশুটির মা নাসিমা বেগম জানান,গত মাসের ৮ তারিখ সন্ধ্যার পরে নিজ বাড়িতে উঠানে ও ঘরে মনের আনন্দে খেলা করছিল ফারজু।
ওই সময় তার মা বাড়ির বাহিরে যান।খেলতে খেলতে কখন যেন শিশুটির পরনের জামায় পিছনে আগুন লেগে যায়।শিশুটির চিৎকার কান্নাকাটি শুনে দু’জন মহিলা এগিয়ে এলেও বৈদ্যুতিক আগুন ধারনা করে তারা আগুন নেভানোর চেস্টা করেননি।ভয়ে এমনকি শিশুটির কাছে যাননি। পরনের জামা প্যান্টও খুলে দেননি।মহিলা দু’জন আগুন নেভানোর জন্য শিশুটির শরীরে বালু ছিটাতে থাকেন।
এক পর্যায়ে এক প্রতিবেশি লোক দৌড়ে এসে আগুন জ্বলতে দেখে শিশুটির শরীর থেকে জামাটা ছিড়ে ফেলেন।ততক্ষণ শিশুটির শরীরের পেট পিঠ কোমর থাই উরু নিম্মাংঙ্গসহ অর্ধেক অংশ পুড়ে গেছে।
শিশুটিকে ওই সময় উদ্ধার করে পাটগ্রাম হাসপাতালে ভর্তির পর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেপার্ড করা হয়।
দিনমুজুর বাবা ফেনীতে।মা নাসিমা ধার কর্জ করে মানুষের কাছে টাকা নিয়ে রংপুরে যান।রংপুর থেকে শিশুটিকে শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিট হাসপাতালে রেপার্ড করা হয়।সেখানে মৃত্যুপথযাত্রী আগুনে দগ্ধ সেই শিশুটি প্রাণে বেঁচে গেলেও এখন আবার নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে।একটু আরাগ্য লাভ করে ৩৫ % দগ্ধ ঘা নিয়ে অতিকষ্ঠে দিন কাটছে শিশুটির।
শরীরে বালু ছিটানোর কারণে সেই বালু ড্রেসিং করে তুলতে হয় বলে জানান পাটগ্রাম হাসপাতালের আরএমও ডাঃ কালী প্রসাদ রায়।তিনি বলেন,শিশুটির ড্রেসিং করতে গিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে।সে কারণে কয়েক ব্যাগ এ -নেগেটিভ রক্ত দেয়া হয়েছে।
ড্রেসিং করার কারণে শিশুটি অন্যরকম কষ্ট আর ভয় পেয়ে এখন অজানা এক আতংকে চিৎকার করছে।
শিশুটির মা নাসিমা বেগম বলেন,বাচ্চার বাবা ফেনীতে গেছেন কাজ করতে।টাকা পয়সা নাই,কেমনে আমার কলিজার টুকরা আয়শারে বাঁচাই।গরীব মানুষ
ঢাকায় থাকা খাওয়ার সমস্যা আর বাচ্চার বাবা দিনমুজুর। মা কে ছাড়া অন্য কাউকে হাসপাতালে ঢুকতে দেয় না। সেখানে শিশুটির কান্না থামানো কঠিন এক পরিস্থিতিতে পরে অগ্নিদগ্ধ শিশুটিকে নিয়ে পাটগ্রামে চলেন আসেন দুখীনি মা।
সমাজের বিত্তবান ও হৃদয়বান মানুষদেরকে এগিয়ে আসা উচিত। চিকিৎসার সহায়তা চান পরিবারটি।
Leave a Reply